দেশের জ্বালানি ব্যবহারে বায়োমাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বিশেষত, গ্রামাঞ্চলে রান্নার জন্য তা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশের ৯০% এরও বেশি মানুষ রান্না-বান্নার জন্য গতানুগতিক জ্বালানি ব্যবহার করে আসছে, যেমন: কাঠ, পাটের লাঠি, কৃষিজ বর্জ্য ইত্যাদি। অধিকাংশ গৃহিণী সাধারণ চুলায় রান্না-বান্না করে থাকেন, যা অতিমাত্রায় বায়োমাস পোড়ায় এবং ঘরের পরিবেশ দূষিত করে এবং পরিবেশের ক্ষতি করে। শিশু এবং মহিলা যারা অধিক সময়ব্যাপী রান্নাঘরে অবস্থান করেন, তারা পুরাতন পদ্ধতির চুলায় রান্না-বান্না করার ক্ষেত্রে দূষক ও বিষাক্ত পদার্থের ঝুঁকিতে থাকেন এবং তারা তাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এর মতে, প্রতিবছর ৩২,০০০ শিশু এবং ১৪,০০০ নারী ঘরের বায়ু দূষণের কারণে মারা যান।
এই পরিস্থিতিতে ‘বাংলাদেশ কাউন্সিল অব সাইয়েন্টিফিক এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (বিসিএসআইআর) রান্নার চুলা আবিষ্কার করেছেন, যা অধিকতর দক্ষতার সাথে জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিত করে এবং রান্নাঘরে কম ধোঁয়া ও দূষণ সৃষ্টি করে। উন্নত চুলার বেশ কিছু মডেল তৈরি করা হয়েছে। যদিও বিসিএসআইআর ১৯৮০ সালের শুরুতে উন্নত চুলা আবিষ্কার করেছিলেন, তথাপি এই প্রযুক্তি গণমানুষের নাগালে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তেমন কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি। ২০০৬ সালে সর্বপ্রথম জিআইজেড প্রতিষ্ঠান উন্নত চুলা গণমানুষের নাগালে পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য ছিল গ্রাম পর্যায়ে প্রতিটি ঘরে, প্রতিষ্ঠানে এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে উক্ত প্রযুক্তি পৌঁছে দেওয়া এবং সে সম্বন্ধে সম্যক ধারণা দেওয়া, যাতে বায়োমাস এর ব্যবহারের উপর চাপ কমিয়ে দেওয়া যায় এবং ঘরোয়া দূষণের বিরুদ্ধে কাজ করা যায়।
উন্নত চুলার বাজার প্রচার ও প্রসার করার জন্য ২০১৩ সালে ’কান্ট্রি অ্যাকশন প্লান’ (সিএপি) কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ৩ কোটি পরিবারের নিকট উন্নত চুলা বন্টন করে দেওয়া সিএপি কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত ছিল।স্রেডা এবং গ্লোবাল অ্যালায়ান্স ফর ক্লিন কুক স্টোভস (জিএসিসি)এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। উন্নত চুলার বাজার কার্যক্রম সম্প্রসারিত করা এবং এর বিদ্যমান কার্যক্রম বৃদ্ধি করার বিষয়ে স্রেডা এবং জিএসিসি(GACC) যৌথভাবে কাজ করে যাবে।
তাপের অপচয় রোধ করার উদ্দেশ্যে উন্নত চুলাগুলো ডিজাইন করা হয়েছে। এ ধরনের চুলার প্রধান অংশগুলো হলো:
উন্নত চুলা ব্যবহারের উপকারিতাসমূহ: